সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক এমএম মোর্শেদ ওই দুই আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে একই সময়ে সরকারি তদন্ত টিমের সদস্যরা এই দুর্ঘটনা তদন্তে শহরের চৌড়হাস মোড়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, আকিফার বাবার দায়ের করা মামলায় আগের দিন রবিবার ফরিদপুর থেকে বাসের মালিক জয়নুলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে কুষ্টিয়ায় এনে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। চালক মহিদ মিয়া ওরফে খোকন সকালে ওই একই আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালত মালিক ও চালকের জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে আকিফা হত্যার ঘটনায় গঠিত সরকারি তদন্ত টিমের সদস্যরা সকালে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় এসে পৌঁছেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার চৌড়হাস মোড়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ১০ সদ্যেসের ওই তদন্ত দল। এর মধ্যে ঢাকার ৬ জন ও বাকিরা স্থানীয়। তদন্ত টিমের সদস্যরা আকিফার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা ও মা’র সাথেও কথা বলেন। এছাড়া স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথেও কথা বলেন তারা।
তদন্ত টিমে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম, বিআরটিএ পরিচালক (অপারেশন) সিতাংশু শেখর বিশ্বাস, বুয়েটের সহযোগি অধ্যাপক ও দুর্ঘটনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সদস্য কাজী মোহাম্মদ সাইফুন নেওয়াজ, নিরাপদ সড়ক চাই এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আজাদ হোসেন, সাংবাদিক অশোক চৌধুরী।
এছাড়া স্থানীয় জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ছাড়াও বিআরটিএ বিভাগীয় পরিচালকগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা গঞ্জেরাজ পরিবহনের একটি বাস শহরের চৌড়হাস মোড়ের কাউন্টারে এসে থামে। সে সময় থেমে থাকা বাসের সামনে দিয়ে আট মাস বয়সী শিশু কন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পারা হচ্ছিলেন মা রিনা বেগম। হঠাৎ কোনো হর্ণ ছাড়াই চালক খোকন বাসটি চালিয়ে দেন। এতে মায়ের কোল থেকে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে আহত হয় শিশু কন্যা আকিফা। বাসের ধাক্কায় রিনা বেগমও আহত হন। মুমূর্ষু আবস্থায় ওই দিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩০ আগস্ট মারা যায় শিশু আকিফা।
আকিফা কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকার সবজি ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদের মেয়ে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতে নিহত আকিফার পিতা হারুন উর রশীদ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় ঘাতক বাসের চালক খোকন, সুপারভাইজার ইউনুস মাস্টার এবং বাস মালিক জয়নুলকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।